আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে

Latest News:
ইতিহাস লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
ইতিহাস লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৪

আলী আমজাদের ঘড়ি

 

আলী আমজাদের ঘড়ি, চাঁদনি ঘাটের সিঁড়ি,
জিতু মিয়ার বাড়ি ও বঙ্কু বাবুর দাড়ি।

সিলেটে এক সময় এই প্রবাদটি বহুল প্রচলিত ছিল। আলী আমজাদের ঘড়ি সিলেটের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।

আলী আমজাদের ঘড়ি সুরমা নদীর উত্তর পাড়ে কীনব্রীজের ঠিক পাশেই অবস্থিত। এটি চৌকোণ একটি ঘর যার মাথায় স্থাপন করা হয়েছে একটি বিশালাকার ঘড়ি। ঘড়িটির ডায়ামিটার আড়াই ফুট এবং এর কাঁটা দুই ফুট লম্বা। ২৬ ফুট উচু ঘড়িঘরটির প্রস্থ ৮ ফুট ১০ ইঞ্চি।

১৮৭৪ সালে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশার জমিদার আলী আমজাদ খান এই ঘড়িটি স্থাপন করেন। লোহার খুঁটিতে ঢেউটিন পেঁচিয়ে তৈরি গম্বুজ আকৃতির ঘড়িঘরটি তখন থেকেই লোকমুখে আলী আমজাদের ঘড়িঘর নামে পরিচিতি পেয়ে এসেছে।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী আর্মির বোমার আঘাতে ক্বীনব্রীজের পাশাপাশি এই ঘড়িঘরটিও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। স্বাধীনতার পর সিলেট পৌরসভার (বর্তমানে সিলেট সিটি কর্পোরেশন) প্রথম চেয়ারম্যান বাবরুল হোসেন বাবুলের প্রচেষ্টায় ঘড়িঘরটি সংস্কার করা হয় ও ঘড়িটি প্রাণ ফিরে পায়। তবে এর কিছুদিনের মধ্যেই যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে ঘড়ির কাটা থেমে যায়।

১৯৮৭ সালে আলী আমজাদের ঘড়ি মেরামত করে পুনরায় চালু করা হয়। এ সময় ঢাকার একটি কারিগরি প্রতিষ্ঠান ঘড়িটি চালু রাখার জন্য রিমোট কন্ট্রোলের ব্যবস্থা করে দেয়। কিন্তু কয়েক বছর যেতে না যেতেই ঘড়িটি আবার বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সিজান নামের একটি কোম্পানী ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ঘড়িটি পুনরায় চালু করে।

২০১১ সালে সিলেট সিটি কর্পোরেশন এই ঘড়িটিকে পুনরায় মেরামতকালে এর উচ্চতা বাড়ানো হয়। ডায়ামিটার সাদার বদলে কালো করে দেয়া হয়। বর্তমানে আলী আমজাদের ঘড়িতে রঙ্গিন এলইডি (LED) বাতি লাগিয়ে এর সৌন্দর্য্য আরো বৃদ্ধি করা হয়েছে।






সোমবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৪

কীনব্রীজ: সিলেটের প্রবেশদ্বার



সিলেটের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য ক্বীনব্রীজ। ক্বীনব্রীজকে বলা হয় সিলেটের প্রবেশদ্বার। ব্রিটিশ আমলে আসাম প্রদেশের তৎকালীন গভর্নর স্যার মাইকেল কীনের নামানুসারে এই ব্রীজের নাম রাখা হয় ক্বীনব্রীজ। তখন বৃহত্তর সিলেট জেলা আসাম প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত ছিল।

একবার স্যার মাইকেল ক্বীনের সিলেট সফরে আসার জন্য সুরমা নদীতে একটি সেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ফলে রেলওয়ে বিভাগ ১৯৩৩ খ্রীষ্টাব্দে সুরমা নদীর উপরে একটি সেতু নির্মাণের উদ্যেগ নেয়। ১৯৩৬ সালে সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য ব্রীজটি খুলে দেয়া হয়। এই ব্রীজটির দৈর্ঘ্য ১১৫০ ফুট ও প্রস্থ ১৮ ফুট। ঐ সময়েই ব্রীজটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল ৫৬ লক্ষ টাকা। তৎকালীন আসাম সরকারের শিক্ষামন্ত্রী আব্দুল হামিদ ও এক্সিকিউটিভ সদস্য রায় বাহাদুর প্রমোদ চন্দ্র দত্ত ব্রীজটি নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানী হানাদাররা ডিনামাইট দিয়ে ব্রীজের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ের সহযোগীতায় ব্রীজটির বিধ্বস্ত অংশ পুনঃনির্মাণ করা হয়। সর্বশেষ গত জোট সরকারের আমলে ক্বীন ব্রীজের ব্যাপক সংস্কার সাধন করা হয়। এর ফলে ক্বীনব্রীজ ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকা এক অনন্য সৌন্দর্য্য লাভ করে।



Copyright © 2014 রিপন ঘোষের খেরোখাতা All Right Reserved
^
Blogger দ্বারা পরিচালিত.