আলী আমজাদের
ঘড়ি, চাঁদনি
ঘাটের সিঁড়ি,
জিতু মিয়ার
বাড়ি ও বঙ্কু বাবুর দাড়ি।
সিলেটে এক সময় এই প্রবাদটি বহুল প্রচলিত
ছিল। আলী আমজাদের ঘড়ি সিলেটের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
আলী আমজাদের ঘড়ি সুরমা নদীর উত্তর পাড়ে
কীনব্রীজের ঠিক পাশেই অবস্থিত। এটি চৌকোণ একটি ঘর যার মাথায় স্থাপন করা হয়েছে একটি
বিশালাকার ঘড়ি। ঘড়িটির ডায়ামিটার আড়াই ফুট এবং এর কাঁটা দুই ফুট লম্বা। ২৬ ফুট উচু
ঘড়িঘরটির প্রস্থ ৮ ফুট ১০ ইঞ্চি।
১৮৭৪ সালে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার
পৃথিমপাশার জমিদার আলী আমজাদ খান এই ঘড়িটি স্থাপন করেন। লোহার খুঁটিতে ঢেউটিন
পেঁচিয়ে তৈরি গম্বুজ আকৃতির ঘড়িঘরটি তখন থেকেই লোকমুখে আলী আমজাদের ঘড়িঘর নামে
পরিচিতি পেয়ে এসেছে।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী
আর্মির বোমার আঘাতে ক্বীনব্রীজের পাশাপাশি এই ঘড়িঘরটিও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। স্বাধীনতার
পর সিলেট পৌরসভার (বর্তমানে সিলেট সিটি কর্পোরেশন) প্রথম চেয়ারম্যান বাবরুল হোসেন
বাবুলের প্রচেষ্টায় ঘড়িঘরটি সংস্কার করা হয় ও ঘড়িটি প্রাণ ফিরে পায়। তবে এর
কিছুদিনের মধ্যেই যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে ঘড়ির কাটা থেমে যায়।
১৯৮৭ সালে আলী আমজাদের ঘড়ি মেরামত করে
পুনরায় চালু করা হয়। এ সময় ঢাকার একটি কারিগরি প্রতিষ্ঠান ঘড়িটি চালু রাখার জন্য
রিমোট কন্ট্রোলের ব্যবস্থা করে দেয়। কিন্তু কয়েক বছর যেতে না যেতেই ঘড়িটি আবার
বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সিজান নামের একটি কোম্পানী ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ঘড়িটি পুনরায়
চালু করে।
২০১১ সালে সিলেট সিটি কর্পোরেশন এই
ঘড়িটিকে পুনরায় মেরামতকালে এর উচ্চতা বাড়ানো হয়। ডায়ামিটার সাদার বদলে কালো করে
দেয়া হয়। বর্তমানে আলী আমজাদের ঘড়িতে রঙ্গিন এলইডি (LED) বাতি লাগিয়ে
এর সৌন্দর্য্য আরো বৃদ্ধি করা হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার গঠনমূলক মন্তব্য ও সমালোচনা আমার লেখনীকে সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করবে। দয়া করে অশালীন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন।