সালটা ছিল যথাসম্ভব ২০০৯। আমার ছোট মাসির হঠাত প্রসব ব্যাথা উঠলে সিলেট
এমএজি ওসমানি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো। রাতে যদি ঔষধ বা অন্য কোন জরুরী
প্রয়োজন পড়ে তাই সেদিন রাত্রে লন্টু ভাগনা ও আমার উপর দায়ীত্ব পড়লো ওয়ার্ডের বাইরে অবস্থানের জন্য।
আমি আর লন্টু ভাগনা মোবাইল ব্রাউজিং করে মশার কামড় খেয়ে খেয়ে রাত প্রায়
কাটিয়ে দিচ্ছিলাম। হঠাত ভোর চারটার দিকে লক্ষ্য করলাম কয়েকজন মানুষ ত্রস্ত
পায়ে বারবার এদিক-সেদিক ছুটাছুটি করছে। তাদের অস্থিরতায় বুঝতে পারলাম কোন
বড় ধরণের সমস্যা হয়েছে। নার্স ও ডিউটি অফিসারের
সাথেও ক্ষণে ক্ষণে আলাপ করতে দেখলাম।
আমার আবার নিজ থেকে অতি আগ্রহ
দেখানোর অভ্যাস কম। কিন্তু তাদের উৎকণ্ঠা আর অস্থিরতায় বসে থাকতে পারলাম
না। কাছাকাছি গিয়ে বোঝার চেষ্টা করলাম। আমি আর লন্টু ভাগনা ওদের সাথে কথা
বলে জানলাম, একজন প্র্যাগন্যান্ট মহিলার জন্য ইমিডিয়েট ২ব্যাগ এ পজেটিভ
(এ+) রক্ত দরকার। কিন্তু তারা অনেক চেষ্টা করে মাত্র এক ব্যাগ রক্ত জোগাড়
করতে পেরেছে। এখন আরো এক ব্যাগ রক্ত না হলে অপারেশন করা যাবেনা।
আমি জানতাম আমার রক্তের গ্রুপ এ পজেটিভ। কিন্তু এর আগে কখনও রক্ত দেয়া
হয়নি। খানিকটা ভীরু ভীরু কন্ঠে বললাম, আমি যতোটুকু জানি আমার রক্তের গ্রুপ এ
পজেটিভ। আপনারা আরেকবার চেক করে শিওর হলে আমি রক্ত দিতে পারি। মুখে
বলছিলাম ঠিক কিন্তু একটু ভয় ভয় করছিল।
লন্টু ভাগনা পাশ থেকে চিমটি কাটলো। ভয় করলেও আমি অটল থাকলাম রক্ত দেবোই। রোগীর অভিভাবকরা আমাকে মেডিকেলের প্যাথলজি বিভাগে নিয়ে গেলেন। রক্ত পরীক্ষা করে আমার রক্তের গ্রুপ কনফার্ম হলেন। বেডে শুইয়ে সুঁচ গেঁথে দেয়া হলো ডানহাতের একটি শিরাতে।
প্রথম যখন রক্ত টানা শুরু হলো তখন চোখে অন্ধকার দেখলাম। মাথাটা ঝিম ঝিম করতে শুরু করলো। শরীরটা দূর্বল হয়ে এলো। ওই অবস্থাতেই নিজেকে খানিকটা ভতসর্না করলাম। কি দরকার ছিলো নিজ থেকে বিপদ ডেকে আনার!!!!!
ধীরে ধীরে শরীর খানিকটা স্বাভাবিক হলো। প্রাথমিক অবস্থার মতো দূর্বল লাগছেনা। রক্ত দেয়া শেষ হলে একটা ডিম আর ম্যাংগো জুস দেয়া হলো খাওয়ার জন্য। শরীরে খানিকটা শক্তি ফিরে পেলাম।
সবেচেয়ে আশ্চর্য্যন্বিত হয়েছিলাম, আমি যখন চলে আসবো তখন ওই রোগিনীর স্বামী আমার হাতে পাঁচশ টাকার দুটি নোট গুঁজে দিতে চাইলেন!!!!!
আমি তো রীতিমতো অবাক! আমি জিজ্ঞেস করলাম কি ব্যাপার!
রোগিনীর স্বামী বললেন, এটা কিছু না ভাই। কিছু কিনে খাবেন।
আমি এবার রীতিমতো অপমানিতবোধ করলাম। আমি কোন উত্তর দেয়ার আগেই ডিউটি অফিসার রোগিনীর স্বামীকে উদ্দেশ্য করে বললেন, এটা আপনি কি করলেন? আপনি একটু আগে যে বিপদে ছিলেন তাতে করে উনি আপনার কাছে বিশ-ত্রিশ হাজার টাকা চাইতে পারতেন। উনি স্বেচ্ছ্বায় রক্ত দিয়েছেন বলেই এতো রাতে রক্ত পাওয়া গেল। আর আপনি কিনা উনাকে টাকা দিয়ে ছোট করছেন !!!!!!!!!
রোগিনীর স্বামী লজ্জ্বা পেলেন বোঝা গেল। তিনি টাকাটা নিজের পকেটে ফিরিয়ে নিলেন। ততোক্ষণে ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে। ওদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে, মাসীর খোঁজ নিয়ে মেডিকেল থেকে বেরিয়ে এলাম।
সেদিন বিকালেই মাসিকে দেখতে গিয়ে ওই রোগিনীর খোঁজ নিলাম। সেই বোনটির পাশে একটি ফুটফুটে মেয়ে সন্তান দেখতে পেয়ে আমার ভীষন ভালো লেগেছিল।
লন্টু ভাগনা পাশ থেকে চিমটি কাটলো। ভয় করলেও আমি অটল থাকলাম রক্ত দেবোই। রোগীর অভিভাবকরা আমাকে মেডিকেলের প্যাথলজি বিভাগে নিয়ে গেলেন। রক্ত পরীক্ষা করে আমার রক্তের গ্রুপ কনফার্ম হলেন। বেডে শুইয়ে সুঁচ গেঁথে দেয়া হলো ডানহাতের একটি শিরাতে।
প্রথম যখন রক্ত টানা শুরু হলো তখন চোখে অন্ধকার দেখলাম। মাথাটা ঝিম ঝিম করতে শুরু করলো। শরীরটা দূর্বল হয়ে এলো। ওই অবস্থাতেই নিজেকে খানিকটা ভতসর্না করলাম। কি দরকার ছিলো নিজ থেকে বিপদ ডেকে আনার!!!!!
ধীরে ধীরে শরীর খানিকটা স্বাভাবিক হলো। প্রাথমিক অবস্থার মতো দূর্বল লাগছেনা। রক্ত দেয়া শেষ হলে একটা ডিম আর ম্যাংগো জুস দেয়া হলো খাওয়ার জন্য। শরীরে খানিকটা শক্তি ফিরে পেলাম।
সবেচেয়ে আশ্চর্য্যন্বিত হয়েছিলাম, আমি যখন চলে আসবো তখন ওই রোগিনীর স্বামী আমার হাতে পাঁচশ টাকার দুটি নোট গুঁজে দিতে চাইলেন!!!!!
আমি তো রীতিমতো অবাক! আমি জিজ্ঞেস করলাম কি ব্যাপার!
রোগিনীর স্বামী বললেন, এটা কিছু না ভাই। কিছু কিনে খাবেন।
আমি এবার রীতিমতো অপমানিতবোধ করলাম। আমি কোন উত্তর দেয়ার আগেই ডিউটি অফিসার রোগিনীর স্বামীকে উদ্দেশ্য করে বললেন, এটা আপনি কি করলেন? আপনি একটু আগে যে বিপদে ছিলেন তাতে করে উনি আপনার কাছে বিশ-ত্রিশ হাজার টাকা চাইতে পারতেন। উনি স্বেচ্ছ্বায় রক্ত দিয়েছেন বলেই এতো রাতে রক্ত পাওয়া গেল। আর আপনি কিনা উনাকে টাকা দিয়ে ছোট করছেন !!!!!!!!!
রোগিনীর স্বামী লজ্জ্বা পেলেন বোঝা গেল। তিনি টাকাটা নিজের পকেটে ফিরিয়ে নিলেন। ততোক্ষণে ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে। ওদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে, মাসীর খোঁজ নিয়ে মেডিকেল থেকে বেরিয়ে এলাম।
সেদিন বিকালেই মাসিকে দেখতে গিয়ে ওই রোগিনীর খোঁজ নিলাম। সেই বোনটির পাশে একটি ফুটফুটে মেয়ে সন্তান দেখতে পেয়ে আমার ভীষন ভালো লেগেছিল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার গঠনমূলক মন্তব্য ও সমালোচনা আমার লেখনীকে সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করবে। দয়া করে অশালীন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন।